কুলং দহতি রাজাগ্নিঃ স পশুদ্রব্যসঞ্চয়ম্- এই অংশি কোথা থেকে উদ্ধৃত হয়েছে? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষন কর। আচার্য মনু বিরচিত মনুসংহিতা (রাজধর্মঃ – সপ্তম অধ্যায়) প্রশ্নের মান 5
উঃ- আচার্য মনু বিরচিত মনুসংহিতা গ্রন্থের রাজধর্মঃ নামক সপ্তম অধ্যায় থেকে আলোচ্য অংশটি উদ্ধৃত হয়েছে।
আচার্য মনু আলোচ্য শ্লোকে ইন্দ্র বরুনাদি শ্রেষ্ঠ দেবতার সারাংশ থেকে জাত় রাজার অপ্রতিহত প্রভাব ও সামর্থ্যের কথা বর্ণনা করেছেন।
রাজা সকলের রক্ষক ও পরিচালক। ইন্দ্র বায়ু যম সূর্য বরুণ চন্দ্র কুবের ও অগ্নি – এই অষ্ট দেবতার সারভূত অংশ নিয়েই ঈশ্বর রাজা কে সৃষ্টি করেছেন।ফলে রাজা ইন্দ্রের মতো মহানায়ক, বায়ুর মতো সর্বত্রগামী, যমের মতো ধর্মপরায়ণ,সূর্যের মতো তেজস্বী,অগ্নির মতো ক্রোধী, বরুনের মত দুষ্ট নাশক, চন্দ্রের মত আনন্দদায়ক এবং কুবেরের মতো সম্পদশালী।এই কারণেই রাজা সকল প্রাণীকে অভিভূত ও সন্তপ্ত করতে পারেন।
কিন্তু কোনো প্রাণী তার দিকে সরাসরি দৃষ্টিপাত পর্যন্ত করতে পারে না।
অগ্নি দাহিকা শক্তি আছে একথা সর্বজন বিদিত। রাজরোষেও যে প্রায় অগ্নিতুল্য -একথাও বিশেষ প্রসিদ্ধ।
তবে রাজার ক্রোধাগ্নি অগ্নি থেকেও ভীষনতর। কারণ সাধারণ অগ্নি কেবলমাত্র তার অতি নিকটবর্তী কে দাহিকা শক্তি দ্বারা দগ্ধ করে থাকে যে ব্যক্তি অসাবধানতাবশত আগুনের কাছে যায় সেই ব্যক্তিকেই কেবল দগ্ধ করে।
কিন্তু রাজরোষ অগ্নি যার উপর পতিত হয় সে দূরে অবস্থান করলেও নিস্তার পায় না এমনকি অপরাধী ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজন গবাদিপশু ও ধন-সম্পদ সমস্ত কিছু ধ্বংস হয়ে যায়। তাই মনু বলেছেন- কুলং দহতি রাজাগ্নিঃ সপশুদ্রব্যসঞ্চয়ম্।’ সুতরাং প্রত্যেকেরই উচিত রাজার অনুকূল আচরণ করে রাজার সন্তোষ বিধান করা।