শ্রীগঙ্গাস্তোত্রম্ পৌরাণিক কাহিনী (gangastotram long note)শঙ্করমৌলিবিহারিণী গঙ্গা দেবীর সম্বোধন
রচনাধর্মী প্রশ্ন, পূর্ণমান ৫
শ্রীগঙ্গাস্তোত্রম্ পৌরাণিক কাহিনী উল্লেখ করে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্য শঙ্করমৌলিবিহারিণী সম্বোধনটির সার্থকতা বুঝিয়ে দাও ?
ভুমিকা : অদ্বেত মতবাদের প্রধান প্রবক্তা শঙ্করচার্য শ্রীগঙ্গাস্তোত্রম্ পদ্যাংশে গঙ্গাদেবী সম্পর্কে যে সমস্ত বিশেষণগুলি উল্লেখ করেছেন তার মধ্যে অন্যতম হল ‘শঙ্করমৌলিবিহারিণী।’
সম্বোধনের ব্যাখ্যা :
শঙ্কর শব্দের দ্বারা মহাদেবকে বোঝায়। মহাদেব তার মৌলি অর্থাত মস্তকে স্থিত জটা জালের মধ্যে গঙ্গাকে আবদ্ধ করে রাখেন এবং পরে গঙ্গাকে মুক্ত করে বিন্দুসরোবরে তাকে ত্যাগ করেন। তাই তিনি শঙ্করমৌলিবিহারিণী নামে পরিচিত।
শ্রীগঙ্গাস্তোত্রম্ পৌরাণিক কাহিনী :
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে জানা যায় সগর রাজার ষাট হাজার সন্তানকে কপিল মুনির অভিশাপ থেকে উদ্ধার করতে রাজা ভগীরথ ব্রহ্মার বরে দেবী গঙ্গাকে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে আনার অনুমতি পান।
কিন্তু গঙ্গা নামার সময় তাকে ধারণ করার ক্ষমতা একমাত্র মহাদেবের ছাড়া আর কারও ছিল না। তাই ভগীরথ তপস্যা করে মহাদেবকে সন্তুষ্ট করেন এবং রাজি করান। গঙ্গা ভীষণ বেগে শঙ্করের মাথায় পড়ে তাকে পাতালে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যত হয় ফলে শঙ্কর রেগে গিয়ে তার জটাজালের মধ্যে গঙ্গাকে অবরুদ্ধ করেন।
জটাতে গঙ্গা কিছুকাল বিরাজ করার জন্য গঙ্গাকে ‘শঙ্করমৌলিবিহারিণী’ বলা হয়। আবার তপস্যা করে শঙ্করকে সন্তুষ্ট করলে শঙ্কর তার জটা থেকে গঙ্গাকে মুক্ত করে বিন্দুসরোবরে ত্যাগ করেন।
উপসংহার :
উপরিউক্ত পৌরাণিক কাহিনীকে স্মরণ করে শঙ্করাচার্য্য গঙ্গাবেদীকে ‘শঙ্করমৌলিবিহারিণী’ বিশেষণে বিশেষিত করেছেন এবং যথার্থ কবিমুল দার্শনিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
Discussion about this post