উচ্চ মাধ্যমিক একাদশ শ্রেণীর পাঠ্যাংশ দশাবতারস্তোত্রম্ শ্লোকগুলির শব্দার্থ ও বঙ্গানুবাদ সহজ সরল ভাষায় | Class XI Text Dasavtarstoram
দশাবতারস্তোত্রম্
একাদশ শ্রেণীর পাঠ্যাংশ
শ্লোক-১
প্রলয়পয়োধিজলে ধৃতবানসি বেদং
বিহিতবহিত্র-চরিত্রমখেদম্।
কেশব!ধৃতমীনশরীর
জয় জগদীশ হরে!
অন্বয়ঃ- কেশব ধৃতমীনশরীর প্রলয়পয়োধিজলে বিহিতবহিত্র – চরিত্রম অখেদম্ বেদম্ ধৃতমানসি জয় জগদীশ হরে।
শব্দার্থঃ- কেশব(হে কেশব) ধৃতমীনশরীর (মৎস রূপ দেহধারী) প্রলয়পয়োধিজলে
(বিনাশকালে সমুদ্রের জলে) বিহিতবহিত্র-চরিত্রম্ (নৌক রূপ দেহ ধারন করে) অখেদম্(অনায়াসে) বেদম্(বেদকে) ধৃতমানসি(ধারন করেছিলেন) জয়জগদীশ হরে( হে জগতের ঈশ্বর হে হরি তোমার জয় হোক।)
বঙ্গানুবাদঃ- হে কেশব! হে মৎসরূপধারী! প্রলয়কালীন সময়ে বেদ সমূহ সমুদ্রের জলের নিমগ্ন হলে তুমি নৌকারূপ ধারণ করে অনায়াসেই সেই বেদসমূহকে রক্ষা করেছিলেন । হে জগতের ঈশ্বর হে হরি তোমার জয় হোক।
শ্লোক-২
ক্ষিতিরতিবিপুলতরে তিষ্ঠতি তব পৃষ্ঠে
ধরণিধারণকিণ – চক্রগরিষ্ঠে
কেশব! ধৃতকূর্মশরীর
জয় জগদীশ হরে!
অন্বয় ও শব্দার্থঃ- কেশব (হে কেশব) ধৃতকূর্মশরীর (কূর্ম রূপ ধারী) ক্ষিতিঃ(পৃথিবী) অতিবিপুলতরে(অত্যন্ত বিশাল) তব(তোমার) পৃষ্ঠে(পিঠে) তিষ্ঠতি( অবস্থিত)। ধরণিধারণ( পৃথিবীকে ধারণ করার কারণে ) কিণ- চক্রগরিষ্ঠে( শুষ্কভগ্ন চিহ্ন অঙ্কিত হয়ে ) জয় জগদীশ হরে( হে জগতের ঈশ্বর হে হরি তোমার জয় হোক)।
বঙ্গানুবাদঃ- হে কেশব! হে কূর্মরূপ ধারী! তোমার বিশাল পৃষ্ঠদেশে অধিষ্ঠিত হয়ে, পৃথিবী রক্ষা পেয়েছিল। সেই সময় তোমার পৃষ্ঠদেশ শুষ্কভগ্ন চিহ্ন অঙ্কিত হয়ে গৌরবান্বিত হয়েছে। হে হরি হে জগতের ঈশ্বর তোমার জয় হোক।
শ্লোক-৩
বসতি দশনশিখরে ধরণী তব লগ্না
শশিনি কলঙ্ককলেব নিমগ্না
কেশব! ধৃতশূকররূপ
জয় জগদীশ হরে।
অন্বয় ও শব্দার্থঃ- ধৃতশূকররূপ( হে বরাহরূপধারী) শশিনি(চন্দ্র) কলঙ্ককলেব(কলঙ্ক রেখার মতো) নিমগ্না(মগ্না) ধরনী(পৃথিবী) তব(তোমার) দশনশিখরে(দাঁতের উপরিভাগ) লগ্না(সংলগ্ন হয়ে) বসতি( বাস করছে) কেশব(হে কেশব) জগদীশ(হে জগতের ঈশ্বর) হরে(হে হরি) জয়(তোমার জয় হোক)।
বঙ্গানুবাদ- হে কেশব! হে শূকর রূপ দেহধারী! পৃথিবী তোমার দাঁতের উপর সংলগ্ন হয়ে চন্দ্রের কলঙ্করেখার মতো অবস্থান করেছে। এ জগতের ঈশ্বর হে হরি তোমার জয় হোক।
শ্লোক-৪
তব করকমলবরে নখমদ্ভুতশৃঙ্গং
দলিতহিরণ্যকশিপুতনুভৃঙ্গং
কেশব!ধৃতনরহরিরূপ
জয় জগদীশ হরে।
অন্বয় ও শব্দার্থঃ- ধৃতনরহরিরূপ (হে নৃসিংহ রূপধারী )তব (তোমার ) করকমলবরে (শ্রেষ্ঠ করপদ্মে) নখম্ অদ্ভুতশৃঙ্গম্ ( অদ্ভুত নখশৃঙ্গে) দলিত হিরণ্যকশিপু (হিরণ্যকশিপু দেহরূপ) তনুভৃঙ্গম্ (শরীরকে বিদীর্ণ করেছিল) কেশব (হে কেশব) জয় জগদীশ হরে (হে হরি, হে জগতের ঈশ্বর তোমার জয় হোক।)
বঙ্গানুবাদঃ- হে নৃসিংহ রূপধারী! তোমার উত্তম করপদ্মের অদ্ভুত শৃঙ্গে হিরণ্যকশিপু দেহ বিদীর্ণ হয়েছিল। হে কেশব! হে জগতের ঈশ্বর তোমার জয় হোক।
শ্লোক-৫
ছলয়সি বিক্রমনে বলিমদ্ভুতবামন
পদনখনীরজনিতজনপাবন।
কেশব! ধৃতবামনরূপ
জয় জগদীশ হরে।
অন্বয় ও শব্দার্থঃ- কেশব (হে কেশব) ধৃতবামনরূপ (হে বামন রূপধারী )অদ্ভুতবামন (হে অদ্ভুত বামন) বিক্রমনে (পদক্ষেপে )বলিম (দৈত্যরাজ বলিকে ) ছলয়সি (ছলনা করেছিলে) পদনখনীরজনিতজনপাবন(পায়ের নখাগ্র থেকে নিঃসৃত জলে জগৎ কে পবিত্র করেছ) জয় জগদীশ হরে (হে হরি হে জগতের ঈশ্বর তোমার জয় হোক।)
বঙ্গানুবাদঃ- হে কেশব! হে বামনরূপ ধারী! তোমার চরমনখাগ্র থেকে নিঃসৃত জলে জগত পবিত্র হয়েছে। তুমি বামন রূপ ধারণ করে তিন পদক্ষেপে বলিকে ছলনা করেছিলে। সে জগতের ঈশ্বর হে হরি তোমার জয় হোক।
শ্লোক-৬
ক্ষত্রিয়রুধিরময়ে জগদপগতপাপং
স্নপয়সি পয়সি শমিতভবতাপম্।
কেশব! ধৃতভৃগুপতিরূপ
জয় জগদীশ হরে।
অন্বয় ও শব্দার্থঃ- ধৃতভৃগুপতিরূপ (হে ভৃগুপতি রূপধারী) ক্ষত্রিয়রূধিরময়ে (ক্ষত্রিয়ের রক্তময় )পয়সি (জলে) অপগতভবতাপম্ (পাপ দূর হয়েছে স্নপয়সি (স্নান করে )সমিতভবতাপম্ (পৃথিবীর তাপ শান্ত হয়েছে )জগৎ (জগৎকে )জয় জগদীশ হরে (হে হরি হে জগদীশ তোমার জয় হোক।)
বঙ্গানুবাদঃ- হে কেশব! হে ভৃগুপতিরূপধারী পরশুরাম তুমি ক্ষত্রিয়ের রক্তময় জলে জগৎকে স্নান করিয়ে সমস্ত পাপ দূর করে জগতকে প্রশমিত করেছ। হে হরি হে জগতের ঈশ্বর তোমার জয় হোক।
শ্লোক-৭
বিতরসি দিশু রণে দিকপতি কমণীয়ং
দশমুখমৌলিবলি রমণীয়ম্।
কেশব! ধৃতরামশরীর
জয় জগদীশ হরে।
অন্বয় ও শব্দার্থঃ- কেশব (হে কেশব) ধৃতরামশরীর (হে রামরূপী নারায়ণ) রণে (যুদ্ধে )দিকপতি (দশ দিকের দিকপাল) কমণীয়ং (কাঙ্ক্ষিত )দশমুখ( দশাননরাবণ) মৌলবলি (মস্তকরূপ উপহার) রমণীয়ং (সুন্দর )দিশু( দশদিকে) বিতরসি( বিতরণ করেছ )জয় জগদীশ হরে (হে হরি! হে জগদীশ তোমার জয় হোক।)
বঙ্গানুবাদঃ- হে কেশব! হে রামরূপী নারায়ণ যুদ্ধে দশ দিকপালদের আকাঙ্ক্ষিত দশানন রাবণের মস্তক রমণীয় উপহার রূপে দশদিকে প্রদান করেছিলে। হে জগদীশ হে হরি তোমার জয় হোক।
শ্লোক-৮
বহসি বপুষি বিশদে বসনং জলদানং
হলহতিভীতিমিলিতযমুনাভম্
কেশব! ধৃতহলধররূপ
জয় জগদীশ হরে।
অন্বয় ও শব্দার্থঃ- কেশব (হে কেশব) ধৃতহলধররূপ( হে হলধারী বলরাম) বিশদে (শুভ্র ) বপুষি (দেহে) হলহতি( হলের আঘাতে) ভীতি মিলিত যমুনাভম্ (যমুনার রঙ মিলিত হয়েছে এই রূপ ) জলদাভম্ (মেঘবর্ণ ) বসনম্ (বস্ত্র )বহসি (ধারন করে) জয় জগদীশ হরে (হে হরি হে জগদীশ তোমার জয় হোক।)
বঙ্গানুবাদঃ- হে হলধারী বলরাম! তোমার শরীর শুভ্র হওয়া সত্ত্বেও হলের (লাঙলের ) আঘাতে ভীত যমুনার মনের ইচ্ছা পূরণের জন্য মেঘের মতো শ্যাম বর্ণ ধারণ করেছ। হে হলধারী বলরাম হে জগতের ঈশ্বর হে হরি তোমার জয় হোক।
উচ্চ মাধ্যমিক একাদশ শ্রেণীর পাঠ্যাংশ দশাবতারস্তোত্রম্ শ্লোকগুলির শব্দার্থ ও বঙ্গানুবাদ সহজ সরল ভাষায় দেওয়া হলো । আরো কি ধরনের post করবো তা comment box জানাতে পারেন ।