বরাহমিহির-প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী

টীকা – বরাহমিহির ( Barahamihir ) দ্বাদশ শ্রেণী সংস্কৃত সিলেবাসের অন্তর্গত বরাহমিহির ( Barahamihir SANSKRIT NOTES) টীকা এই ভাবে লিখলে বেশি নম্বর পাওয়া যাবে । প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানে বারহমিহিরের অবদান।

বরাহমিহির-প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী-টীকা

প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিদ ও কবি।ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে আবিস্মরনীয় নাম হল বরাহমিহির ( Barahamihir )। ভারতীয় সংস্কৃতির সুবর্ণযুগে তিনি আবিভূর্ত হয়েছিলেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানের সবচেয়ে খ্যাত ও জনপ্রিয় হলেন বরাহমিহির( Barahamihir )।

বরাহমিহিরের ব্যক্তিগত জীবন

বরাহমিহির গুপ্তযুগের সমসাময়িক ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের গগনে আবিভূত হয়েছিলেন। বরাহমিহিরের পিতার নাম আদিত্য দাস। আনুমানিক ৪৯৯ খ্রিস্টাব্দে বরাহমিহির ভারতের অবন্তিনগরে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমান জলন্ধর জেলার কাল্পীনামক স্থানে জন্মগ্রহন করেন। তিনি বিক্রমাদিত্যের নবরত্নের মধ্যে অন্যতম রত্ন ছিলেন।

বরাহমিহির সম্পর্কে কিংবদন্তি

বরাহমিহিরের পিতা আদিত্য দাস সূর্যের উপাসক ছিলেন। তিনি সূর্যের নাম অনুসারে পুত্রের নাম রাখেন মিহির। এরপর সম্রাট বিক্রমাদিত্যের এক পুত্র জন্মালে মিহির গগণা করে বলেন এই পুত্র বরাহ(শূকর) দ্বারা আক্রন্ত হয়ে মারা যাবেন। যথা সময়ের দ্বারা ভবিষ্যৎবাণী ফলে যাওয়ায় রাজা তাকে বরাহ উপাধিতে ভূষিত করেন।

বরাহমিহির রচিত গ্রন্থাবলী বা লেখা বই

বরাহমিহির জোর্তিশাস্ত্রের তিন শাখাতেই পন্ডিত ছিলেন তবে প্রধান গ্রন্থ তিনটি যথা-

১)পঞ্চসিদ্ধান্তিকা ২)বৃহদসংহিতা ৩) বৃহজ্জাতক

১) পঞ্চসিদ্ধান্তিকা :-

কোনাে একটি বিশেষ গ্রন্থ নয়, গণিত জোতিষের বিষয়ে তার রচিত পাঁচটি গ্রন্থকে বৃহৎসংহিতা । একসঙ্গে বলা হয় পঞ্চসিদ্ধান্তিকা। বরাহমিহির পঞ্চসিদ্ধান্তিকা নামক বিখ্যাত গ্রন্থ রচনা করেন, এই অমূল্য গ্রন্থটি পাঁচটি অংশ (সিদ্ধান্ত) নিয়ে গঠিত: সূর্যসিদ্ধান্ত, রোমকসিদ্ধান্ত, পৌলিশসিদ্ধান্ত, পৈতামহসিদ্ধান্ত ও বাশিষ্ঠসিদ্ধান্ত।

২) বৃহদসংহিতা :-

প্রসিদ্ধ এই জোতিষ গ্রন্থটি পদ্য আকারে লিখিত ।তিনি পদ্যে লিখিত বৃহৎসংহিতা নামে অন্য একটি প্রসিদ্ধ জ্যোতিষ গ্রন্থ রচনা করেন, যাতে জ্যোতিষী দৃষ্টিকোণ থেকে বহু পাথরের বিবরণ ও পাক-ভারতের নানা ভৌগোলিক তথ্য; সূর্য-চন্দ্রাদির গতি ও প্রভাব; আবহবিদ্যা, স্থাপত্য এবং পূর্ত কর্মাদি প্রসঙ্গে জ্যোতির্বিদ্যার প্রয়োজনীয়তা প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা রয়েছে।

৩) বৃহজ্জাতক-

এখানে জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রয়ােজনীয়তার কথা আলােচিত হয়েছে। এই গ্রন্থে ব্রজলেপ অর্থাৎ বর্তমানে যা সিমেন্ট, তা উল্লেখ রয়েছে। পন্ডিত বরাহমিহির তাঁর এই গ্রন্থে ‘ব্রজলেপ’ নামে আধুনিক সিমেন্টের সমগোত্রীয় একটি বস্ত্তর প্রস্ত্ততপ্রণালি বর্ণনা করেছেন। প্রাচীন ভারতে তাঁর তৈরি ব্রজলেপের গাঁথুনী দিয়ে বড় বড় ইমারত তৈরি হতো। বরাহমিহির ভারতীয় পঞ্জিকার সংস্কারক।

বৃহজ্জাতক ছাড়াও হােরাজ্জাতক প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।

প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানে বারহমিহিরের অবদান

জ্যোতির্বিজ্ঞানে বারহমিহিরের অবদান সম্পর্কে আলোচনা করে প্রথমে বলতে হয় বরাহমিহির আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের গনক। তিনি দিন-রাত্রি-মাস-বছর প্রভৃতি বিষয়ে যে সব তথ্য দিয়েছেন তা এখনাে অনুসৃত। গণিত শাস্ত্রে ত্রিকোণমিতির অনেক সূত্র তিনি আবিষ্কার করেন।

তিনিই বর্ষ গণনায় বৈশাখকে প্রথম মাস হিসেবে গণ্য করার রীতি প্রচলন করেন। এর আগে চৈত্র ও বৈশাখকে বসন্ত ঋতুর অন্তর্গত বলে ধরা হতো। বর্তমানে প্রচলিত ভারতীয় তথা বাংলা বর্ষ গণনায় বরাহমিহিরের পদ্ধতিই অনুসরণ করা হয়।

পৃথিবীর আকার ও আকৃতি সম্বন্ধেও তাঁর স্বচ্ছ ধারণা ছিল। বরাহমিহিরের সঠিক মৃত্যুকাল জানা যায় না। কারও মতে তিনি ৫৮৭ খ্রিস্টাব্দে, আবার কারও মতে ৫৭৮ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।

( SANSKRIT NOTES বরাহমিহির )

বৈদিক সাহিত্যের অন্য পোস্টগুলি পড়ুন

উচ্চ মাধ্যমিক সংস্কৃত – জ্যোতির্বিদ্যা ও গণিত

Comments